রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৯ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক :
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে ‘সুদের’ টাকা পরিশোধ না করায় জোরপূর্বক বসতবাড়ী দখল করে নেয় সুদখোর সেই সাথে ভূক্তভোগী পরিবারকে তাড়িয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ পাওয়াগেছে ।
এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে জগন্নাথপুর থানা পুলিশ বুধবার দখলকৃত বাড়ীটি উদ্ধার করে ভূক্তভোগি পরিবারের নিকট হস্তান্তর করেন।
উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের ঘুঙ্গিরগাঁও গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
গত ২৪ জুলাই কলকলিয়া ইউনিয়নের ঘুঙ্গিয়ারগাঁও গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে সেলিম মিয়া সুদের টাকার জন্য তার বসত বাড়ি দখলের অভিযোগে প্রতিবেশী ছাতক উপজেলার ভাতগাঁও ইউনিয়নের গোয়াসপুর গ্রামের রফিক মিয়ার বিরুদ্ধে জগন্নাথপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালে সেলিমের বাবা নুরুল ইসলাম ছেলেকে বিদেশ পাঠানো জন্য গোয়াসপুর গ্রামের রফিক মিয়ার নিকট থেকে সুদে এক লাখ টাকা আনেন। পরে ধারাবাহিকভাবে নুরুল ইসলাম ওই টাকার সুদ বাবদ ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা রফিক মিয়াকে দেন। একপর্যায়ে গত ১১ মাস আগে সুদের লাভ আর দিতে না পারায় রফিক মিয়া তার দ্বিতীয় স্ত্রীর পরিবার নিয়ে নুরুল ইসলামের বাড়ি দখল করেন। এরপর থেকে রফিক মিয়া ওই বাড়িতে বসবাস করে আসছিল।
এদিকে, চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি নুরুল ইসলাম মারা যান।
নুরুল ইসলামের ছেলে সেলিম মিয়া সাংবাদিক দের বলেন, চলতি বছরের ৪ জুলাই আমার বাবা স্ট্রোক করে মারা যান। তিনি মারা যাওয়া পর সুদখোর রফিক মিয়া দাবী করে বাবার নিকট ৬ লাখ টাকা পান। এ টাকা পরিশোধের জন্য তিনি অমানবিক মানসিক অত্যাচার করছিলেন।
সুদের টাকা পরিশোধ না করায় আমার মাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়ে বসতবাড়ী দখল করে নেন রফিক মিয়া। ওই সময় আমি বাড়ীতে ছিলাম। এরপর থেকে মাকে নিয়ে অন্যত্র ভাড়া বাসা নিয়ে অনেক কষ্টে দিনযাপন করছিলেন তাঁরা ।
তিনি জানালেন, নিরুপায় হয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করার বুধবার জগন্নাথপুর থানা পুলিশ বাড়িটি উদ্ধার করে দিয়েছে।
অভিযুক্ত রফিক মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্ঠা করে তাঁকে পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর স্ত্রী বিলকিছ বেগম বলেন, পাঁচ বছরের জন্য নুরুল ইসলাম আমাদেরকে এই বাড়িতে থাকতে দিয়েছেন। ছেলেকে বিদেশ পাঠানোর জন্য স্ট্যাম্পের মাধ্যমে আমার স্বামীর কাছ থেকে তাঁরা টাকা নিয়েছে। তবে কত টাকা নিয়েছে সেই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্ট্যাম্পে লেখা আছে!
কলকলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল হাসিম বলেন, রফিক মিয়া এলাকায় একজন কুখ্যাত সুদখোর হিসেবে পরিচিত। নুরুল ইসলাম মারা যাওয়ার পর তাঁর স্ত্রী-সন্তানকে বাড়ি থেকে বের করে দেন রফিক মিয়া। একাধিক বার তাকে সালিশ বৈঠকে বসার কথা বললেও সে সামনে আসেনি।
জগন্নাথপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান যুগান্তর কে বলেন, অভিযোগ পেয়ে আমি সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি।দু’পক্ষের সঙ্গে এবিষয়ে আলাপ আলোচনা করে বাড়ীটি উদ্ধার করে ভুক্তভোগি পরিবারের নিকট হস্তান্তর করেছি।
টাকার বিষয়ে দু’টি স্ট্যাম্প পাওয়া গেছে। একটিতে ৫ শতাংশ সুদের কথাটি উল্লেখ আছে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে। প্রয়োজনী সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ওসি জানান, সুদ বা পাওনা টাকার জন্য কেউ কারো বাড়ি দখল করতে পারে না।
এটা খুবই অমানবিক এ ধরনের আর কোনো অভিযোগ পেলে কঠোর পদক্ষেপ নেব।
Leave a Reply